বৈশাখের ছোঁয়া খাবার টেবিলে
বৈশাখ মানেই এখন অঢেল আনন্দ-কোলাহলের এক অবিরাম আশ্রম। বৈশাখ মানেই পান্তা-ইলিশ খাওয়ার ধুম। কেউ এ আনন্দ সার্বজনীনতার চাদরে মুড়িয়ে ভাগ করে নেয়। আবার কেউ ঘরোয়া আবহের মধ্যে থেকে পালন করতে চায় এ আনন্দ। সেক্ষেত্রে ঘরের পরিপাটিতে ব্যস্ত হতে হয় বাড়ির গিন্নীকে। বিশেষ করে খাবার টেবিলকে ঘিরে এক দেশীয় আমেজ আনবার আপ্রাণ চেষ্টা তাকে করতে হয়। কারণ খাবারের ঘ্রাণ ভরিয়ে তোলে মন-প্রাণ। তারই টানে টেবিলে আসার নানান ভান।
খাবার ঘরকেও বর্ণিল সাজে সাজিয়ে তুলতে হবে। এই ঘরের প্রধান অংশ হচ্ছে খাবার টেবিল, তাই টেবিলটিকে সাজাতে হবে দেশীয় উপাদান দিয়ে। টেবিল রানারটি শীতল পাটি, বাঁশ অথবা নকশী কাঁথার তৈরি হতে পারে। রানারের উপর মাটির মোমদানি, বাঁশের তৈরি গ্লাসস্ট্যান্ড ও মাটির ফুলদানিতে কিছু তাজা ফুল দিয়ে সাজালে টেবিলটি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। ঘরের এক কোণে রাখা যেতে পারে মাটির টবে কিছু সতেজ গাছ। ঘরের পর্দা হিসাবে বাঁশের চিক ব্যবহার করলে ভাল লাগবে। তাছাড়া রং বেরং এর পর্দাও ঝোলানো যেতে পারে। ঘরের দেয়ালে টেরাকোটা ঝোলালে ঘরটিতে ভিন্ন মাত্রা যোগ হবে।
বৈশাখের আনন্দ পূর্ণতা পায় বাঙালি খাবারকে ঘিরে। আর তাই বাঙালিয়ানা ধরে রাখতে খাবার পরিবেশন পাত্রটির দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে। তাই খাবার পরিবেশনের ক্ষেত্রে মাটির বাসন-কোসনকে প্রাধান্য দিতে হবে। মাটির পাত্রে খাবার পরিবেশন করলে বৈশাখের আনন্দে ভিন্নমাত্রা যোগ হবে। আর চামচ হিসাবে ব্যবহার করতে হবে কাঠ, বাঁশ বা নারকেলের মালার তৈরি চামচ। টেবিল ম্যাট হিসাবে বাঁশ, চটের তৈরি ম্যাট মাটির বাসন-কোসনের সাথে ভাল লাগবে। সেইসাথে খাবার টেবিলে রাখতে হবে মাটির ফুলদানীতে একগুচ্ছ সতেজ ফুল বা ছোট একটি পাত্রে সজীব গাছ।
নিজের সংস্কৃতির যত কাছে আমরা যেতে পারব, তা সে বিশেষ দিনকে উপলক্ষ করেই হোক; আমাদের মনের খোরাক ততটাই পূর্ণ হবে। সবাইকে পহেলা বৈশাখের অনাবিল শুভেচ্ছা। আগাম শুভ নববর্ষ।
সূত্র: সাবিহা কমু, ইন্টোরিয়র ডিজাইনার